বরাবরই রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ভালো লাগে বলে অপেক্ষায় ছিলাম ছবিটির জন্য। কিন্তু ছবি মুক্তির আগেই কোরিয়ান রোম্যান্টিক মুভির লিস্ট ঘাঁটাঘাটি করতে গিয়ে পেলাম Always শিরোনামের মুভিটা। ট্রেলার দেখেই বুঝলাম এই ছবিটি থেকেই Do Lafzo Ki Kahani ছবিটি নকল করেছে। হুবহু নকল করা সত্ত্বেও যদিও বলিউড অহরহ Inspired ট্যাগ লাগিয়ে দেয় তাদের সব নকল ছবিতে। যাই হোক, বলিউডের মুভিটা দেখার চিন্তা বাদ দিয়ে দেখতে বসে গেলাম Always মুভিটা।
সাউথ কোরিয়ার এই মুভিটি মুক্তি পায় ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর। ১০৬ মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটির কাহিনী আবর্তিত হয় চিওল-মিন নামের একজন প্রাক্তন বক্সারকে ঘিরে যে কিনা কোন এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চার বছর তিন মাস জেল খাটার পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে এবং নানা ধরণের সৎ কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে উপার্জনের পথ বেছে নেয়। এভাবেই সে নাইট শিফটের এক পার্কিং দেখাশোনার কাজ পেয়ে যায় পার্টটাইম হিসেবে, আর থাকার জন্য তাকে একটি ছোট রুম দেওয়া হয় যেখানে একটি ছোট টিভিও ছিল। এই পার্কিং-এই আগে একজন বৃদ্ধ দায়িত্ব পালন করতো। আর এই বৃদ্ধর সাথে গল্প করতে এবং টিভি সিরিজ দেখতে প্রতিদিন আসতো জাং-হুয়া নামের এক অন্ধ মেয়ে যে কিনা একাধারে এতিমও। বৃদ্ধর অনুপস্থিতিতে জাং-হুয়া চিওল-মিনের সাথেই নিয়মিত টিভি সিরিজ দেখতে থাকে। আর এভাবেই টিভি দেখা আর ঘোরাফেরার মাধ্যমের প্রেম হয় তাদের ভেতর। সেই সাথে চিওল-মিন বক্সিঙের অনুশীলনও শুরু করে আবার। এক সময় চাওল-মিন চায় জাং-হুয়ার চোখ ঠিক করতে, যেহেতু জাং-হুয়া জন্ম থেকে অন্ধ ছিল না। কিন্তু অপারেশনের এত্ত টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চাওল-মিনকে অন্য এক পথে পা বাড়াতে হয়। এদিকে জাং-হুয়ার চোখ ঠিক হয়ে যায় কিন্তু চাওল-মিনকে সে আর খুঁজে পায় না। সময়ও পেরিয়ে যায়। তারপর? এরপরের গল্পটুকু জানতে হলে দেখতে হবে Always মুভিটির শেষ অব্দি।
অসাধারণ এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন সং লিগন। পরিচালকের Flower Island, Forest of Time, Feathers in the Wind, Spider Forest, Dance of Time প্রভৃতি ছবিগুলো ইতোমধ্যেই বিশ্ব জোড়া সমাদৃত। এছাড়া কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিও নির্মাণ করেছেন পরিচালক। San Francisco International Film Festival, Cannes Film Festival, Pusan International Film Festival, Melbourne International Film Festival এর মত আন্তর্জাতিক আসরে একাধিক বার পুরস্কার পেয়েছেন।
চাওল-মিন এবং জাং-হুয়া চরিত্রে অভিনয় করা সু জি-সাব এবং হান হু-জুর অভিনয় অসাধারণ লেগেছে। বলা বাহুল্য, এই ছবির কল্যাণে অভিনেতা সু জি-সাব ১৯তম কোরিয়ান কালচার এবং এন্টারটেইনমেন্ট এ্যাওয়ার্ড এবং অভিনেত্রী হান হু-জু CETV Asia’s Top Ten Popular Award এর আসরে হালু স্টার প্রাইজ পায়। ছবির পার্শ্ব চরিত্রগুলোর অভিনয়ও নিরাশ করেনি।
তবে ছবির চিত্রগ্রহণের কাজে আরও যত্নশীল হওয়া দরকার ছিল বোধ করি। সেই সাথে সঙ্গীতায়জনেও আরও নজর দিলে ভালো হত।
অনবদ্য ছবিটির কাহিনীকার জাং-হুন সাং। তবে চিত্রনাট্যের কাজ করেছেন পরিচালক সং লিগন স্বয়ং।
Comments
Post a Comment